ইউনুছ শিকদার (সুবর্ণচর) নোয়াখালী : নোয়াখালী জেলার সুবর্ণচর উপজেলাতে পাঁচ মাসের (৫) বেতন না পেয়ে মানবেতর জীবন কাটাচ্ছেন দারুল আরকাম মাদ্রাসার শিক্ষকবৃন্দ।
মসজিদ ভিত্তিক শিশু ও গণশিক্ষা এবং দারুল আরকাম মাদ্রাসাটি সরকারের একই প্রকল্পের আওতায় থাকলেও পরবর্তীতে মসজিদ ভিত্তিক প্রকল্প আলাদা করা হয়েছে। কিন্তু মাঝখানে দারুল আরকাম মাদ্রাসাটি আলাদা হওয়ায় শিক্ষকদের ৫ মাসের বেতনভাতা বন্ধ হয়ে গেছে।
চক্ষু লজ্জার কারণে ত্রান ও চাইতে পারছেনা এসব শিক্ষকেরা।
চক্ষু লজ্জার কারণে ত্রান ও চাইতে পারছেনা এসব শিক্ষকেরা।
বাংলাদেশের যে সকল এলাকায় প্রাথমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান (স্কুল) নেই সে'সকল এলাকায় প্রাথমিক শিক্ষাকে সকল শিশুদের মাঝে আলোর প্রদীপ ছড়িয়ে দেওয়ার জন্য ২০১৪ সালের ৩০'শে ডিসেম্বর মসজিদ ভিত্তিক শিশু ও গণ শিক্ষার পাশাপাশি ইসলামিক ফাউন্ডেশনের আওতায় প্রথমিক শিক্ষা কার্যক্রম চালুর মন্তব্য প্রকাশ করেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
ইসলামিক ফাউন্ডেশনের ওয়েবসাইট সুত্রে এসব তথ্য জানা যায়। পরবর্তীতে ২০১৮ সালের মার্চ মাসে দারুল আরকাম মাদ্রাসার শিক্ষকরা নিয়োগ লাভ করে প্রাথমিক কার্যক্রম শুরু করে সারা দেশে।
এ প্রকল্পের মেয়াদ ২০১৯ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত কার্যকর করা হয়। যা' (৬ষ্ঠ পর্যায়) শেষ করে এবং ৭ম (সপ্তম পর্যায়) প্রকল্পের অনুমোদন প্রকৃয়াধীন থাকায় অফিস কর্তৃক প্রেরিত বিভিন্ন বার্তার মাধ্যমে দারুল আরকাম মাদ্রাসার কর্মকর্তা-কর্মচারীগণ তাদের জনশক্তি বলে স্পষ্ট হয় ও ১৭ই'মার্চ জাতীর জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুরর রহমানের জন্মশত বার্ষিকী উপলক্ষ্যে হেড অফিস থেকে পাঠানো বার্তাতে "দারুল আরকাম মাদ্রাসার শিক্ষক কর্মকর্তা-কর্মচারী ও ছাত্র/ছাত্রীদের নিয়ে শিশু র্যালি করার আদেশ দেন। যাহা সংক্রোমিত করোনা ভাইরাস (COVID-19) এর কারণে সংক্ষিপ্ত ভাবে পালন করা হয় নিশ্চিত করেন সুবর্ণচরের দারুল আরকানের শিক্ষকবৃন্দ।
কিন্তু বর্তমানে চলতি বছরের জানুয়ারী মাস থেকে বেতন ভাতা এ পর্যন্ত না পাওয়ায় "দারুল আরকাম মাদ্রাসা'র" শিক্ষকদের কষ্টের মধ্যে দিন পার করছেন। পাশাপাশি পারিবারের চাহিদা পুরণ করতে না পেরে নীরবে কাঁদছে শিক্ষকরা যা' দেখার কেউ আছে বলে তাদের জানা নেই।
ইসলামিক ফাউন্ডেশন সূূূূএে জানতে পারি, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০১৪ সালের ৩০ ডিসেম্বর এক সভায় মসজিদ ভিত্তিক শিশু ও গণশিক্ষা কার্যক্রম (৬ষ্ঠ পর্যায়) প্রকল্পের অনুমতির নির্দেশ প্রদান করেন।
প্রাথমিক শিক্ষা চালুর পরে ২০১৫ সালের ৮ই ফেব্রুয়ারী মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শিক্ষা মন্ত্রনালয়ের শিক্ষা কারিকুলামে মন্তব্য প্রকাশে বলেন প্রতিটি শিশুর জন্য ধর্মীয় শিক্ষার বিষয়টি গুরুত্বপুর্ণ।
পরবর্তীতে ২০১৭ সালের নভেম্বর মাসে স্থায়ীভাবে দারুল আরকাম মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠা করেন। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ইসলাম প্রিয় বলেই এই সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন।
এ প্রতিষ্ঠান গুলোতে নিজস্ব সিলেবাসে ৩য় শ্রেণী পর্যন্ত কার্যক্রম শুরু হলেও পর্যায়ক্রমে ২০২০ সালে এসে তা পঞ্চম শ্রেণী পর্যন্ত করা হয়। মসজিদ ভিত্তিক শিশু ও গণ শিক্ষা প্রকল্পের অধীনে শুরু থেকে থাকলেও এখন সেটাকে আলাদা করা হয়েছে।
এমতাবস্হায় চরম দূর্ভোগে পড়েছে এ প্রকল্পের আওতায় ২ হাজার ২০ জন শিক্ষক। উক্ত বিষয়টি সম্পর্কে জানতে চাইলে, দারুল আরকাম নোয়াখালী জেলার সদস্য সচিব মোঃ জিল্লুর রহমান তার নিজ বাসভবনে এক সাক্ষাৎকারে বলেন "দারুল আরকাম মাদ্রাসা"টি প্রধানমন্ত্রী নিজে প্রতিষ্ঠা করেছেন এবং বাংলাদেশের সকল মাদ্রাসার সাইন বোর্ডেও প্রতিষ্ঠাতা হিসেবে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নাম দেওয়া হয়েছে, অতএব আমার মনে হয় প্রকল্পটি আলাদা হয়েছে সেটা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী অবগত নয়, অবগত থাকলে হয়তো তিনি আমাদের বিষয়টি বিশেষ ভাবে বিবেচনা করে পাশ করে দিতেন বলে আমি মনে করি এবং আমাদের এই কঠিন পরিস্থিতির স্বীকার হয়ে ৫ মাসের বেতন না পেয়ে আমরা অনেক কষ্টে পরিবার নিয়ে জীবনযাপন করতে ও হতো না।
এ'বিষয় দারুল আরকাম শিক্ষক সমিতির মহাসচিব আনাস মাহমুদ মুঠোফোনে বলেন "দারুল আরকাম মাদ্রাসাটি প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপে তৈরি হয়েছে। তাই বিষয়টি প্রধানমন্ত্রী নিজেই দেখবেন বলে মনে প্রানে বিশ্বাস করি।
দারুল আরকাম মাদ্রাসা প্রকল্পের বিষয়ে জানতে চাইলে ইসলামিক ফাউন্ডেশনের মহাপরিচালক আনিস মাহমুদ আমাদের বলেন, প্রকল্পটিতে কিছু ঝামেলা রয়েছে। যা আমরা সরাসরি মনিটরিং করে,ঝামেলা বাদ দিয়ে,নতুন করে সাজানোর চেষ্টা করছি।


0 Comments